কালুরঘাট-শাহ আমানত সেতু দ্বিতীয় আউটার রিং রোড: প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই মিলছে সুফল

কালুরঘাট-শাহ আমানত সেতু দ্বিতীয় আউটার রিং রোড: প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই মিলছে সুফল

১২ স্লুইচ গেটের মধ্যে দশটি এবং সড়কের ৬৫ ভাগ কাজ শেষ চালু হবে আগামী বছর

 

দ্বিতীয় আউটার রিং রোড চালু হচ্ছে আগামী বছর। কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কটির ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অর্ধ সম্পন্ন প্রকল্পটির সুফল ইতোমধ্যে মিলতে শুরু করেছে। নগরীর বিস্তৃত এলাকার জীবনমান, পর্যটন এবং আবাসনসহ সার্বিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি শহর রক্ষা বাঁধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ৩ হাজার ২শ কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।

 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, নগরীর যান চলাচলে গতি এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে নগরীর কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু (চাক্তাই খালের মুখ) থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাঁধ–কাম আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা থাকলেও বিভিন্ন ধরনের কাজ বাড়ায় ইতোমধ্যে প্রকল্প ব্যয় ৩ হাজার ২শ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। সিডিএর বিশেষ এই মেগা প্রকল্পে সড়কের পাশাপাশি শহর রক্ষা বাঁধ হচ্ছে। বাঁধে শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য ১২টি স্লুইচ গেট রয়েছে। এসব স্লুইচ গেটে পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প স্থাপন করা হবে। ১২টি স্লুইচ গেটের মধ্যে দশটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। গেটগুলো অস্থায়ীভাবে চালু করা হয়েছে। এর সুফল মিলতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতার সময় চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ পানিতে তলিয়ে না যাওয়ার ক্ষেত্রে এসব স্লুইচ গেট ভূমিকা রেখেছে। বাকি দুটি ছোট স্লুইচ গেটের নির্মাণ কাজ চলতি বছরে শেষ হবে বলে প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রাজীব দাশ জানিয়েছেন।

 

‘চিটাগাং আউটার রিং রোড দ্বিতীয় পর্যায়’ নামের প্রকল্পটি নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চাক্তাই এবং রাজাখালী খালের মুখের স্লুইচ গেট গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি স্লুইচ গেট পুরোদমে চালু হলে নগরীর বিস্তৃত এলাকার জলাবদ্ধতা সামাল দেওয়া যাবে। বিশেষ করে জোয়ারের পানি পুরোপুরি ঠেকানোর পাশাপাশি ভিতরের বৃষ্টির পানি পাম্পের মাধ্যমে নদীতে ফেলে দেওয়ার যে পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসব স্লুইচ গেটে ইউরোপ থেকে আমদানিকৃত বিশেষ ধরনের মরিচা প্রতিরোধক স্টিলে তৈরি গেট স্থাপন করা হবে। চলতি বছরের মধ্যে এসব গেট দেশে পৌঁছাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

 

প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, শহরের জন্য প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি যান চলাচলে প্রত্যাশিত গতি আনবে। শহর রক্ষা বাঁধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এলাকার জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এই প্রকল্প অবদান রাখবে।

 

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রাজীব দাশ বলেন, ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তা ও বাঁধের মধ্যে ৭ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। বাকি কাজগুলোও দ্রুত করা হবে। আমরা বাঁধের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। একেবারে শেষ ধাপে গিয়ে রাস্তা কার্পেটিং করব। আগামী বছর শহরের দ্বিতীয় আউটার রিং রোড হিসেবে এই সড়কে যান চলাচল করবে। সড়কটি পর্যটন ভ্যালুও তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।

সূত্র: হাসান আকবর, দৈনিক আজাদী

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email