বোয়ালখালীর সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন এর একান্ত সাক্ষাৎকার

(বোয়ালখালী থেকে সীতাকুণ্ডে যোগদানের পূর্বে একান্ত সাক্ষাৎকারে দেওয়া তথ্য ও তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি যা বলেছেন, তা হুবহু পাঠকের উদ্দেশ্যে এখানে উপস্থাপন করা হলো।)

প্রিয় বোয়ালখালীবাসী আসসালামু আলাইকুম,
আমি আলাউদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলীজনিত কারণে বোয়ালখালী থেকে বিদায় নিচ্ছি। বোয়ালখালী উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে কাজ করতে পারা আমার জন্য একটা সৌভাগ্যের বিষয় ছিল।

দায়িত্ব গ্রহণ:
গত ৭ আগস্ট ২০২২ তারিখে বোয়ালখালী উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি চেষ্টা করেছি সেবাপ্রার্থীদের হয়রানিমুক্ত ভূমি সেবা প্রদানের জন্য।

কর্মকাণ্ড:
গত এক বছরের প্রচেষ্টায় বোয়ালখালী উপজেলার সকল বিএস এবং আরএস মৌজা ম্যাপ ডিজিটাইজ করা হয়েছে। ডিজিটাইজ মৌজা ম্যাপের সাথে ভূমি সংক্রান্ত রেকর্ড সমূহ সংযুক্ত করে একটি স্মার্ট ভূমি ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই স্মার্ট ভূমি ম্যাপের মাধ্যমে অফিসে বসেই জমির অবস্থান, অবস্থা, পরিমাণসহ গুরত্বপূর্ন তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও খাস, অর্পিত, পরিত্যক্ত, সিকস্তি, সায়রাত মহাল, সংস্থার জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। তহসিলদারগণ ব্যবহার ভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর নিতে পারছেন। এই স্মার্ট ম্যাপের মাধ্যমে সরকারী খাস জমি, নদী, খাল রাস্তার জমি দখলকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

ডিজিটাল রেকর্ড রুম:
অফিস থেকে নথি যাতে গায়েব হয়ে না যায় এবং নথি যেন সহজে খুঁজে পাওয়া যায় সে লক্ষ্যে ডিজিটাল রেকর্ড রুম প্রস্তুত করা হয়েছে। ডিজিটাল রেকর্ড রুম থেকে ৫ মিনিটের মধ্যেই যেকোন নথি খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছে।

কিউআর কোড যুক্ত অনলাইন ওয়ারিশ সনদ:
ওয়ারিশ সনদ জাল যেন না হয় সে লক্ষ্যে শ্রদ্ধেয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোহাম্মদ মামুন স্যারের নির্দেশনায় এবং সহযোগিতায় কিউআর কোড যুক্ত অনলাইন ওয়ারিশ সনদ ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে যা বর্তমানে বোয়ালখালী উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় চলমান আছে।

ডাটাবেইসে লীজ ফি আদায়ের হার দ্বিগুণ হয়েছে:
অর্পিত সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ডাটাবেইস প্রস্তুত করে অর্পিত জমি সমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। যার ফলে এই এক বছরে বোয়ালখালী উপজেলায় অর্পিত সম্পত্তির লীজ ফি আদায়ের হার দ্বিগুণ হয়েছে।

নামজারী ২৮ দিনের মধ্যে সম্পন্ন:
মিস মামলায় মানুষজন যেন হয়রানি না হয় সে লক্ষ্যে সপ্তাহে দুদিন শুনানি নিয়ে মিস মামলার জট কমানো হয়েছে। প্রায় শতভাগ নামজারী ২৮ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

সহযোগিতা:
এইসব কাজে আমাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে আমার বোয়ালখালী উপজেলার ভূমি টিম। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি উপজেলার সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ বোয়ালখালীবাসীর প্রতি; যাদের সহযোগিতায় আমি বোয়ালখালীতে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছি।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ:
বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শ্রদ্ধেয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোহাম্মদ মামুন স্যারের প্রতি। বিভিন্ন কাজে যেভাবে আপনি আমাকে সাপোর্ট, পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়েছেন তা সারা জীবন মনে থাকবে স্যার।

সীতাকুন্ড উপজেলায় যোগদান:
আমার পরবর্তী গন্তব্য সীতাকুন্ড উপজেলা। সকলে আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন যেন আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারি। বোয়ালখালীবাসীর প্রতি ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইলো।