
আজ (২৯ বৈশাখ ১২ মে শুক্রবার) আহলা দরবার শরীফে যুগশ্রেষ্ঠ অলীয়ে কামেল, কুতুবে জামান, কুতুবুল আকতাব জনাব কাজী আসাদ আলী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ)’র ১০৮ তম পবিত্র ওরশ শরীফ
আজ (২৯ বৈশাখ ১২ মে শুক্রবার) আহলা দরবার শরীফে যুগশ্রেষ্ঠ অলীয়ে কামেল, কুতুবে জামান, কুতুবুল আকতাব জনাব কাজী আসাদ আলী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ)’র ১০৮ তম পবিত্র ওরশ শরীফ।
ওরশ শরীফ পরিচালনা করবেন আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে ত্বরীকত শাহসূফী সৈয়দ আবরার ইবনে সেহাব আল-ক্বাদেরী, আল-চিশতী (মাঃজ্বিঃআ)।
হযরত জনাব ক্বেবলা (রহঃ)’র শান মান ক্বারামত কখনো লিখে শেষ করা যাবে না। গাউসুল আজম শাহসূফী হযরত আহমদ উল্লাহ সাহেব ক্বেবলা যাকে ‘আমার জনাব’ বলে সম্বোধন করতেন এবং কুতুবে জামান অর্থাৎ যুগের কুতুব বলে অভিহিত করেছেন।
ইমামে আহলে সুন্নত আল্লামা গাজী আজিজুল হক শেরে বাংলা সাহেব (রহঃ) তার লিখিত বিশ্ববিখ্যাত কিতাব দেওয়ানে আজিজ শরীফে কুতুবে জামান জনাব কাজী আসাদ আলী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ) কে স্বাহেবে ক্বাশফুয়াল কুবুর বলে অভিহিত করেছেন এবং কাজী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ)’র শানে একটি উর্দুতে একটি গজলের মাধ্যমে জগতবাসীকে কাজী আসাদ আলী ক্বেবলা (রহঃ)’র আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্বন্ধে জানান দিয়েছেন।

যিনি আশ্চর্য্য আধ্যাত্মিক ক্ষমতা বলে জমিনে হেটে যাওয়ার সময় মানুষের কবরের আজাব অর্থাৎ কবরে ময়ুতের অবস্থান সম্বন্ধে জানতেন, যিনি চট্টগ্রামের জমিনে অসংখ্য অগণিত আউলিয়া কেরামগনের মাজার শরীফ সনাক্ত করেছেন,নাম প্রকাশ করেছেন,ওরয়াহ শরীফের তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো চট্টগ্রামের শহর কুতুব শাহেনশাহে আমানত হযরত শাহ আমানত খান (রহঃ),পটিয়া নলান্ধা বার আউলিয়ার অন্যতম অলী হযরত গাজী আফজাল আউলিয়া, বোয়ালখালী উপজেলা যার নামে নামকরণ হয়েছে হযরত শরফুদ্দীন বু-আলী কালন্দর শাহ (রহঃ)’র আস্তানা শরীফ,সৈয়দপুর হাওলা সৈয়দ মারুফ,সৈয়দ কুতুব শাহ প্রকাশ (মামা-ভাগিনার মাজার),খিতাবচর আটতলা দরগাহ হযরত ইউসুফ শাহ আল-আরবী,হযরত হাসান শাহ ইউনানী (রহঃ)’র মাজার সহ আরো অসংখ্য মাজার শরীফ সনাক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, এই সমস্ত আরাবীয়ান আলীগণ ইসলাম প্রচারের জন্য এসে যখন এক এক জন অলী এক এক জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন তখন কেউ এদের অবস্থান সম্বন্ধে জানতেন না,উনাদের নাম জানতেন না উনাদের মাজার কোথায় জানতেন না,উনাদের ওরশ শরীফের তারিখ জানতেন না ঠিক সেই সময় কুতুবে জামান কাজী সাহেব ক্বেবলা (রহঃ) সেই সমস্ত মাজার সমূহ সনাক্ত করে স্ব-স্ব এলাকার লোকজনকে এই মাজারগুলো দেখা শোনা করে ত্বাজীম,শ্রদ্ধা, ভক্তি করার তাগিদ দেন অন্যথায় এলাকার জন্য খারাপ হবে বলে জানান দেন। জনাব ক্বেবলা প্রত্যেক এলাকায় কিছু কিছু মানুষকে দায়িত্ব দিয়েছেন এবং তারা দায়িত্ব যথারীতি পালন করেছেন।

#কারামতঃ
কারামতের অর্থঃ যুগে যুগে আল্লাহ্ তালা তাঁর পরিচয় প্রদানের জন্যে আম্বিয়া ও রসূলগণকে প্রেরণ করেছেন তাঁরই বান্দাদের হেদায়াত তথা সঠিক পথপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে। এই সকল খাস্ বান্দাকে তিনি মো’জেযা বা অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। নবীগণের বেলায় এ মোজেযা খাস্ বা নির্দিষ্ট ছিল। যেমন – হযরত ঈঁসা (আ:) মৃতকে জিন্দা তথা জীবিত করেছিলেন; হযরত ইব্রাহীম (আ:) জ্বলন্ত আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন; হযরত ওযাইর (আ:) জন্মান্ধকে তাঁর চোখে হাত বুলিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। শেষ জমানার নবী হযরত আহমদে মোজতবা মোহাম্মদে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম তাঁর পবিত্র আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদকে দু’টুকরো করেছিলেন। একবার আবু জেহেল নিজ হাতের মুঠির ভেতর পাথর নিয়ে রাসূলে খোদা (দ:)-কে জিজ্ঞেস করেছিল মুঠির মধ্যে কী আছে। হুজুর পূর নূর (দ:)-এর মোজেযায় পাথর তাঁকে চিনতে পেরে কলেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্” বাক্যটি পাঠ করেছিল। রাসূলে পাক (দ:)-এর বেসালপ্রাপ্তির পরে নবুয়ত শেষ হয়েছে। অর্থাৎ, নবী করীম (দ:)-এর পরে আর কোনো নবী আসবেন না। কিন্তু দ্বীন ইসলাম জারি রাখার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্তা’লা কেয়ামত পর্যন্ত নবীগণের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যে ওলি-আওলিয়াগণকে প্রেরণ করতে থাকবেন। তাঁরা যেহেতু নবীগণের প্রতিনিধি, সেহেতু তাঁদের দ্বারাও অলৌকিক ঘটনাবলী ঘটতে থাকবে। আকায়েদের কেতাবে বর্ণিত আছে: ’কারামাতুল আউলিয়ায়ে হাক্কুন্’ অর্থাৎ, আউলিয়া বুযূর্গবৃন্দের কারামত তথা আলৌকিক ঘটনাবলী সত্য। যেমন- হযরত বড় পীর মুহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানী (রহ:) মুর্দাকে জিন্দা করেন। হযরত খাজা গরীবে নওয়াজ মুঈনউদ্দিন আজমেরী সাঞ্জেরী (রহ:) আনা সগরের সমস্ত পানি একটি পাত্রে তুলে নিয়ে রেখেছিলেন। হযরত শাহ্ আহমদ উল্লাহ্ আল্ হাসানী সাহেব কেবলা (রহ:) বহু দূরে গহীন অরণ্যে অবস্থিত বাঘকে বদনা দ্বারা আঘাত করে নিজ কাঠুরে মুরীদকে বাঘের কবল থেকে রক্ষা করেন। এ কারণেই শরীয়তসিদ্ধ বিশ্বাস হলো, আম্বিয়া ও আউলিয়াগণ আল্লাহ্ পাকের ক্ষমতায় ক্ষমতাবান। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ্তা’লা এরশাদ ফরমান – “আমার প্রিয় বান্দা নফল এবাদত (মাওলানা সানাউল্লাহ্ পানিপথীর মতে এর অর্থ তরীকতের সাধনা) পালন দ্বারা আমার এমন নিকটবর্তী তথা সান্নিধ্যপ্রাপ্ত হন যে আমি তাঁকে অত্যন্ত ভালোবাসি; এমন ভালোবাসি যে আমি তাঁর কুদরতী কান হই যা দ্বারা তিনি শোনেন; তাঁর কুদরতী চোখ হই যা দ্বারা তিনি দেখেন; তাঁর কুদরতী হাত হই যা দ্বারা তিনি কাজ করেন এবং তাঁর কুদরতী পা হই যা দ্বারা তিনি চলাফেরা করেন” (বুখারী)।
অনেকে বলে, কারামত আসলে যাদুকরী বিদ্যা যা কোনো যাদুকরও প্রদর্শন করতে সক্ষম। বস্তুত যাদুকরের যাদুকরী বিদ্যা প্রদর্শনীর স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন, একটি ডিম থেকে পাখির বাচ্চা বের করা অথবা বাঁশিকে আকাশে উড়ানো কিংবা ঘড়ির কাঁটা দেখায় দৃষ্টিভ্রম ঘটানো। এ সব কাজের প্রভাব সাময়িক। কিন্তু আল্লাহর আউলিয়াগণ যে কোনো স্থানে, যে কোনো সময়ে, যে কোনো বিষয়ে আলৌকিক ও অসম্ভব কর্ম সংঘটন করতে সক্ষম, আর তাঁদের কারামতের প্রভাবও চিরস্থায়ী। কেননা তাঁদের এ ক্ষমতা খোদাপ্রদত্ত।
জনাব কাজী সাহেব কেবলার কারামত
বাঘের পিঠে আরোহণঃ-
হযরত কাজী সাহেব কেবলা (রহ:) তাঁর যৌবনকালে চট্টগ্রামের মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের গাউসুল আযম হযরত শাহ্ আহমদ উল্লাহ্ আল্ হাসানী সাহেব কেবলার (রহ:) কাছ থেকে ফয়েয তথা আধ্যাত্মিক সুদৃষ্টি পাওয়ার পরে বিভিন্ন পাহাড়ে ও জঙ্গলে গিয়ে গভীর ধ্যান-সাধনা ও রেয়াযত আরম্ভ করেন। এ কারণে বহু রাতে তিনি বাসার বাইরে থাকতেন। সমাজে মানুষের মধ্যে নিন্দুকের তো অভাব নেই। তাই প্রজাদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁর জমিদার পিতা জনাব সফর আলী চৌধুরীর কাছে এই মর্মে অভিযোগ করেন যে হযরত কাজী সাহেব কেবলা উচ্ছন্নে গেছেন (নাউযুবিল্লাহ)। তাঁকে শাসন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। জমিদার সফর আলী চৌধুরী সাহেব ওই সময় তাঁর অপর পরিবারকে সাথে নিয়ে পশ্চিম পটিয়ার দেয়াং নামক স্থানে বসবাস করতেন। কিছু প্রজার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তাঁর শেখ চৌধুরীপাড়ার বাড়িতে চলে আসেন যেখানে জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলা বসবাস করতেন। সন্ধ্যার পর তিনি হাতে একটি ছোরা নিয়ে বাড়ির দরজায় জনাব কাজী আসাদ আলী কেবলার (রহ:) জন্যে অপেক্ষা করতে থাকনে এবং রাগতঃ স্বরে বার বার বলতে থাকেন, “আজিয়া বাড়ি ফিরুক, ফিরি আইলেই তারে আঁই টু’রা টু’রা গরি কাডি ফালাইয়ুম”, অর্থাৎ, আজ বাড়ি ফিরুক, ফিরে আসলেই তাকে আমি কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবো। এদিকে হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলার মাতা সাহেবানী শাহজাদার সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কায় এবং পিতা-পুত্রের মধ্যে যে কোনো অপ্রিয় পরিস্থিতি সামলাবার উদ্দেশ্যে নিজের একটি আঙ্গুলে ক্ষতের সৃষ্টি করেন এবং তা বাটা মরিচে ডুবিয়ে বসে থাকেন। এটা তিনি ঘুমে ঢলে পড়া থেকে রক্ষা পাবার জন্যেই করেছিলেন। রাত গড়িয়ে যখন শেষ প্রহর, ঠিক তখনই জমিদার সফর আলী চৌধুরী সাহেব দেখতে পেলেন, জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলা (রহ:) একটি বিশাল আকৃতির বাঘের পিঠে চড়ে বাড়ির উঠোনে এসে নামলেন। অতঃপর বাঘটি তাঁকে কুর্ণিশ করে বিদায় নিয়ে ধীর গতিতে স্থান ত্যাগ করলো। এই আজব কারমত দেখে তাঁর পিতা জমিদার সফর আলী চৌধুরী সাহেব উপলব্ধি করতে পারলেন যে তাঁর পুত্র উচ্ছন্নে যান নি, বরং বেলায়াত রাজ্যে সম্রাটের আসনে আসীন হয়েছেন। অজ্ঞ প্রজারাই বরং তাঁকে ভুল বুঝেছেন। তাই সাথে সাথেই তিনি জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলার সামনে গিয়ে বল্লেন, “বাবা, তুমি তো আমার পুত্র নও, তুমি আমার বাবা।” বস্তুতঃ জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলার এই কারামত সবাইকে এলান দিয়ে যায় যে আহলা দরবার শরীফের ঐতিহ্যবাহী বেলায়তের সিংহাসনে নব ওলিকুল সম্রাটের অভিষেক হয়েছে।
আহলা দরবার শরীফের সম্মুখে দিঘী_হতে_জ্বীন_বিতাড়ন
এ কথা সর্বজনবিদিত যে চট্টগ্রাম আদিকালে জ্বিন-পরী ও দেও-দানবের আবাসস্থল ছিল। আউলিয়াগণই তাদেরকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করেন এবং তা আবাদ করেন। কথিত আছে যে হযরত বদর শাহ্ (রহ:) যখন সমুদ্রপথে চট্টগ্রামের তীরে এসে পৌঁছেন, তখন এই এলাকা ছিল মিশমিশে অন্ধকার ও জ্বীন-দেও-দানবের আখড়া। তিনি তাদের কাছে এবাদত-বন্দেগীর জন্যে একটু খানি জায়গা চেয়ে সেখানে আলো জ্বালাতে একটি চেরাগ (চাটি) প্রজ্জ্বলনের অনুরোধ করলেন। দেও-দানবরা অনুমতি দিলে তিনি চেরাগ জ্বালালেন। অমনি এই মহান ওলির কারামতে এই চেরাগের আলো দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়লো এবং সমগ্র অঞ্চল আলোকিত হলো। এতে অন্ধকার জগতের দেও-দানবকুল এই অঞ্চল ছেড়ে পালিয়ে যায়। কথিত আছে যে, চট্টগ্রামের কদম মোবারকে অবস্থিত চেরাগী পাহাড়ে হযরত বদর শাহ্ (রহ:) তাঁর বরকতময় চেরাগ জ্বেলেছিলেন। অনুরূপভাবে, বর্তমানে আহলা দরবার শরীফ যেখানে অবস্থিত, সেখানেও ওই সব দেও-দানবের উপদ্রব ছিল। তাদের অত্যাচারে মানুষের জীবনযাপন করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। এমতাবস্থায় এই এলাকার অধিবাসীরা আহলা দরবার শরীফের নয়নমণি, ওলিকুল শিরোমণি, কুতুবে যমান জনাব কাজী আসাদ আলী কেবলার (রহ:) কাছে এসে দেও-দানবদের অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যে আরজি দেন।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, জ্বিনদের উপদ্রবের মূল স্থানটি ছিল আহলা দরবার শরীফের ঐতিহ্যবাহী বিশাল দীঘি, যা আজো দরবার প্রাঙ্গণে অবস্থান করছে। ভক্তবৃন্দ ও এলাকাবাসীর বারংবার আরজির পরিপ্রেক্ষিতে জনাব হযরত কাজী আলী কেবলা (রহ:) একদিন জযবা হালতে, অর্থাৎ, ঐশী ভাবে তন্ময় অবস্থায় দীঘির পানিতে ডুব দেন। ডুব যে তিনি দিলেন, আর তো ওঠেন না। কয়দিন কয় রাত তিনি পানির নিচে ছিলেন তা নিয়ে অবশ্য এ ঘটনার বর্ণনাকারীদের মধ্যে মতান্তর আছে। কেউ কেউ বলেছেন তিন দিন ও তিন রাত; আবার কেউ কেউ বলেছেন সাত দিন সাত রাত। সময় যেটাই হোক না কেন, এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এতোক্ষণ সময় পানির নিচে থাকাটা কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি দীঘির পানির নিচে অবস্থানকালে হঠাৎ এই দীঘির দক্ষিণ-পূর্ব পাড় ভেঙ্গে যায়। কথিত আছে যে, জ্বিন-দেও-দানবরা ওই দিক দিয়েই পালিয়ে যায়। অতঃপর তিনি পানির নিচ থেকে উঠে আসলে এই অঞ্চলে আর কখনো জ্বিনের উপদ্রব হয়নি। আউলিয়াগণ কারামত প্রদর্শন করেই মানুষদেরকে দ্বীনের পথে পরিচালিত করেন, তাদেরকে হেদায়াত দান করেন।
কেউ কেউ বলেন, আজকাল বহু ডুবুরি অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই অনেক সময় ধরে পানির নিচে অবস্থান করতে সক্ষম। তাহলে জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলার (রহ:) কারামতের মাহাত্ম্য কোথায়? আমরা এ ব্যাপারে বলবো, বর্তমানে যারা ওইভাবে পানির নিচে অবস্থান করতে সক্ষম, তারা বহুদিন যাবত অনুশীলন করেই তা সম্ভব করেছেন। পক্ষান্তরে, জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলা (রহ:) বিনা অনুশীলনেই তা সম্ভব করেছেন। বিনা অনুশীলনে এ রকম করতে পারাটাই হলো কারামত। সর্বোপরি, জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলা (রহ:) তিন দিন ও তিন রাত দীঘির পানির নিচে ছিলেন সেখান থেকে জ্বীন-পরী-দেও-দানবদের বিতাড়িত করে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে। তিনি ওই সমস্যা উক্ত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে পেরেছিলেন বলেই ওপরে ওঠে এসেছিলেন। এ সময়ের মধ্যে যদি সমস্যা সমাধান না হতো, তবে যতো দিন ও যতো রাত প্রয়োজন হতো, ততো দিনই তিনি পানির নিচে থাকতেন। তাঁর কাজ ছিল মানুষের সমস্যা সমাধান করা, কোনো ডুব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা নয়।
দেও-দানব বিতাড়নের পরে আহলা দরবার শরীফের ঐতিহ্যবাহী বিশাল দীঘিটি সর্বসাধারণের ব্যবহারোপযোগী হয়। এই ঘটনার পরে জনাব হযরত কাজী আসাদ আলী কেবলা (রহ:) দীঘিতে কিছু চিনি ঢেলে দেন এবং বলেন, “যে কেউ, যে কোনো নিয়্যতে, এই দীঘির পানি পান করলে তার (নেক) মকসুদ পূরণ হবে।” ওলির জবান আল্লাহর বিধান। সর্বসাধারণ এই পানি পান করে আজো উপকার পাচ্ছেন। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, দীঘির পানিতে কোনো প্রকার ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু নেই। কোনো পানিবাহিত রোগেও আক্রান্ত হওয়ার নজির নেই।
আল্লাহর এই মহান অলীর ১০৮ তম ওরশ শরীফের উছিলায় মালিক আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে এই বিষণ্ণ পরিস্থিতি থেকে হেফাজত করুক, আমীন!
(বে-হুরমেতে, সাইয়িদিল মুরসালিন সল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম)