
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এর প্রেসিডেন্ট
এস, এম, আবুল কালাম আজাদ এর জীবন বৃত্তান্ত
আসসালামু আলাইকুম।
১৯৫৪ সালের ১লা নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় (সাবেক হাওলা) পোপাদিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা-মরহুম সৈয়দ নূর আহমেদ এবংমাতা মরহুমা সৈয়দা কুলসুমা খাতুন। চট্টগ্রামের বারো আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহ শেখ সিরাজ উদ্দিন ( রাঃ আঃ) আউলিয়ার আওলাদ ঐতিহ্যবাহী ‘আদু খন্দকার’ বাড়ির মরহুম সৈয়দ আব্দুল করিম খন্দকার তাঁর পিতামহ এবং বোয়ালখালী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মরহুম সৈয়দ আলী আহমেদ শরীফ (শরীফ বাড়ি) তাঁর মাতামহ। ১৯৭১ সালে তাঁর পিতা তাঁর তিন সন্তানকে মহান মক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করেন। তাঁর মাতা সৈয়দা কুলসুমা খাতুন মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং তাঁর দুই বোনও এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন।
এস এম আবুল কালাম আজাদ প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন ১৯৬৭-৬৮ সালে। ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর মওলানা ভাসানীর গভর্ণর হাউজ ঘেরাও আন্দোলন ও ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের ৪ঠা ডিসেম্বরে তিনি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত মওলানা ভাসানীর জনসভায় “স্বাধীন বাংলা-পূর্ব বাংলার” স্লোগান তোলেন।
১৯৭১ সালের ৩০শে মার্চ-এ অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে তিনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন । ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাক-বাহিনী কালুরঘাটে সেনা, নৌ ও বিমান হামলা চালায়। এই যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক মেজর মীর শওকত আলী (পরবর্তী সময়ে লে. জেনারেল মীর শওকত আলী বীরউত্তম)। পরবর্তী সময়ে ১নং সেক্টরে মেজর রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ছাত্র জীবনে পূর্ব-বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার কারণে তাকে আইয়ুব সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সামরিক আইন লঙ্ঘনের কারণে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা বা হুলিয়া নিয়েও তদানিন্তন পূর্ব-বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে চট্রগ্রামস্থ সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি এবং একই বোর্ডের অধীনে কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি এবং “পলিটিক্যাল সাইন্স”-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭২ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন-পূর্ব বাংলা ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং ন্যাপ-এর ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে পরিচালিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চে তিনি ছাত্রসমাজের অন্যতম নেতা হিসেবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। ১৯৭৭-৭৮ সনে তিনি জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন ও প্রেসিডেন্ট জিয়ার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জিয়া হত্যার পর তিনি ‘জিয়া সংসদ’ গঠন করেন। ১৯৮২ সনে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংস্হা গঠনের দায়িত্ব পালন করেন।২০০৯ সনে বিডিআর হত্যার প্রতিবাদে ন্যাশনাল সিকিউরিটি পার্টি গঠন করেন। ১৯৮৭-২০০৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভাসানী ন্যাপের সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ ডিসেম্বরে গঠিত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি’র প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। অতঃপর
এস, এম, আবুল কালাম আজাদ ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ০২রা মে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ নামক দলটি গঠন করেন। পরবর্তীতে দলটি ২০১৩ সালের ১৮ই নভেম্বরে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন লাভ করে। ইতোমধ্যে বিএনএফ একটি বিকল্প রাজনৈতিক দল হিসেবে জনমনে নতুন আশার সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বিএনএফ এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ অবধি দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৪ সালের ০৫ই জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদের ১৯০ ঢাকা-১৭ আসন থেকে “বিএনএফ’র প্রার্থী হিসেবে টেলিভিশন প্রতীকে” ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীকে ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪-১৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় সংসদে তাঁর প্রদত্ত বক্তব্যগুলি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনের (গুলশান-বনানী-ভাসানটেক-ক্যান্টনমেন্ট) সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। বলাবাহুল্য জনাব আজাদ দশম সংসদের জোট বহির্ভূত একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য হিসেবে দেশ বিদেশে পরিচিতি লাভ করেন।
ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন অবস্থায় তিনি থাইল্যান্ড, বাহরাইন, সৌদি আরব ও ইরানে সরকারি সফরে যান। এসময় বিশ্বের অন্যতম খ্যাতিমান থাইল্যান্ডের মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ‘’সার্টিফিকেট অফ এচিভমেন্ট’’ লাভ করেন। তিনি বাহরাইনে এশিয়ান পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের সভায় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন, সৌদি আরবে ওমরাহ হজ্ব পালন করেন এবং ইরানে অনুষ্ঠিত পিইউআইসি (ওআইসি)কনফারেন্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্রসন্তান ও এক কন্যাসন্তানের জনক। তার সহধর্মিণী মিসেস মমতাজ জাহান চৌধুরী মুন্সীগঞ্জের জমিদার তাজউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর (প্রকাশ বড়মিয়া) কনিষ্ঠ ছেলে মরহুম গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (মাখন মিয়া) ও মিসেস নূরজাহান আহমেদ চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও শান্ত মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। জনতা ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। জ্যেষ্ঠ ছেলে সৈয়দ মাহমুদ আজাদ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তার একমাত্র কন্যাসন্তান সৈয়দা শারমিন জাহান স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে জার্নালিজমে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। শারমিন জাহান এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী। ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম মো. ইসহাক চৌধুরীর পুত্র মো. শফিউল্লাহ চৌধুরীর (এমবিএ) সঙ্গে ২০০৮ সালে তার বিবাহ হয়। তার কনিষ্ঠ পুত্র সৈয়দ মাহবুব হাসান আজাদ ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনির্ভাসিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) থেকে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তার কনিষ্ঠ পুত্রের স্ত্রী তাসনোভা আনজুম ফাহিম শান্ত মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিতে স্নাতকে অধ্যয়নরত। জনাব আজাদ তার ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় ভাই মোঃ আবু সিদ্দীক (বার্মা ইস্টার্ণের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী) এবং ছোট ভাই আবু মোঃ শামসুদ্দিন (প্রাইম ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) পরিবার নিয়ে চট্রগ্রামে বসবাস করছেন। তিনি মেসার্স জাহান ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী, প্রতিষ্ঠানটি ০৬ই আগস্ট, ২০২০ইং তারিখে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড থেকে ট্রেড লাইসেন্স লাভ করে। তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ও মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস (এমইএস) এর অধীনে ১ম শ্রেণীর ডেভেলপমেন্ট পার্টনার হিসেবে তালিকাভুক্ত।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করছি জীবন যুদ্ধে যেন মহান আল্লাহ আমাদের সফল ও কামিয়াবি দান করেন, আমিন।
এস, এম, আবুল কালাম আজাদ (রণাঙ্গনের গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা) প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, সাবেক সংসদ সদস্য, ১৯০ ঢাকা-১৭ (ক্যান্টনমেন্ট-গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা এবং এবং সংশ্লিষ্ট ৪ টি আংশিক থানা নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন)
বর্তমান ঠিকানাঃ বাসা নং-১১৪৪, রোড নং-৯/এ, এভিনিউ-১০,মিরপুর ডিওএইচএস, ঢাকা-১২১৬
এনআইডি নং-২৮১ ৭৪৯ ৮৬২৫
পাসপোর্ট নং-BY0811465