
ব্যালট ইউনিট কেন্দ্রের বাইরে, গ্রেফতার-১
বোয়ালখালীতে দিনভর ফাঁকা কেন্দ্র, ভোটারদের ডেকে এনে ভোট গ্রহণ
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ভোটারদের মাঝে ছিলোনা উৎসাহ-উদ্দীপনা। উপজেলার প্রায় কেন্দ্র দিনভর ছিলো জনশূন্য। ভোটারের উপস্থিতি কম থাকায় প্রার্থীর অনুসারীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেকে আনতে দেখা গেছে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে। অন্যান্য নির্বাচনে সকাল সকাল ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম চিত্র দেখা গেছে এই উপনির্বাচনে।
অনেক কেন্দ্রে ভোটাররা আঙ্গুলের ছাপ দিলেও ভোট দেয় নৌকার অনুসারীরা। উপজেলা জ্যৈষ্ঠপুরা রমণী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যালেট ইউনিট বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তা স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রতন চৌধুরী প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট ফিরিয়ে দেন।
ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নিমর্লেন্দু দে সুমন ওই কেন্দ্রে ৫নং বুথ থেকে দুপুর ১২টার দিকে ব্যালেট ইউনিট নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে থাকা নৌকা প্রতীকের অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্পে চলে যান। পরে তা ফিরিয়েও দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রতন চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: নুরুল ইসলাম।
কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সজল দাশ জানান, এই প্যানেলটি নষ্ট ছিলো। এই কেন্দ্রে প্রথম ইভিএম এ ভোট হচ্ছে। তাই ভোটারদের দেখানোর জন্য বুথে দেওয়া হয়েছিল। প্যানেলটি বাইরে গেল কীভাবে আমার জানা নেই। এটা বাইরে নিয়ে যাওয়া অপরাধ। আমি বিষয়টি দেখছি।
নির্মলেন্দু দে বলেন, ভোটারদের দেখিয়ে দেওয়ার জন্য প্যানেলটি এনেছিলাম। এটা নিয়ে লেখালেখি না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিমের বাড়ি এলাকার দরবার দিঘির পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে এ কেন্দ্রে ভোটাররা আঙ্গুলের ছাপ দিলেও গোপন কক্ষে ভোট দিতে দেখা গেছে নৌকার অনুসারীদের। এ কেন্দ্র দিনভর নিয়ন্ত্রণে ছিলো নৌকার কেন্দ্র কমিটির আহ্বায়ক যুবলীগ নেতা শাহাদাত হোসেনের। দেখা যায়নি অপর দুই প্রার্থীর কোনো এজেন্ট।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বাড়ির এলাকার অপর মসজিদ বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে ভোট প্রদান করতে দেখা গেছে নৌকার অনুসারীদের। কেন্দ্রটি একপ্রকার দখলে রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকন ও যুবলীগ নেতা মো: ইউছুপ চৌধুরী।
একই চিত্রের দেখা মিলে জ্যৈষ্ঠপুরা ইসলামিয়া হামিদিয়া মাদ্রাসা ও দরপপাড়া হাজী মতিয়র রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
এসব কেন্দ্রসহ ৮৬ কেন্দ্রের প্রায় ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা আঙ্গুলের ছাপ দিলেও গোপন কক্ষে ভোট দিয়ে দেয় নৌকার অনুসারীরা। এ উপনির্বাচনে রেজাউল করিমের পাশাপাশি অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন শাহজাদা এস এম মিজানুর রহমান ও কাজী আয়েশা ফারজানা।